পাইকারি পণ্যের দাম সর্বদা পরিবর্তনশীল। পণ্যের বর্তমান দাম জানতে উপরের মোবাইল নম্বরে সাপ্লায়রকে সরসরি ফোন করুন।
বিদেশি সাপ্লায়ার কে LC বা TT তে দাম পরিশোধ করুন ৷ দেশী সাপ্লায়ার কে ক্যাশ অন ডেলিভারী বা ফেস টু ফেস ক্রয় বিক্রয় করতে পারেন । কোন ভাবেই অগ্রিম টাকা পয়সা লেনদেন
করবেন না। কুরিয়ারে কন্ডিশনে পণ্য হাতে পেয়ে টাকা প্রদান করবেন৷
আপনার অসাবধানতায় কোন প্রকার প্রতারণার স্বীকার হলে আমরা দায়ী নই ৷
অনলাইনে পন্য ক্রয়ের আগে সমস্ত সিক্যুরিটি গ্রহন করে নিন ৷
We sell all kinds of natural honey from
collecting by natural source. Our man source is form verities flower. We
Since a decade we sell our honey related products with customer trust.
#আমাদের কিছু কথা
মায়িদাহ শপ-এ আপনাদের স্বাগতম। প্রায় এক যুগেরও বেশী সময় যাবত আমরা নিজ
জেলায় খুবই সুনামের সাথে আমাদের পণ্য সেল করে যাচ্ছি। আপনারা আমাদের এই
ওয়েবসাইট থেকে সূলভমূল্যে প্রাকৃতিক চাকের মধু সহ সরিষার মধু, কালোজিরার
মধু ও লিচু ফুলের মধু খুচরা ও পাইকারি ক্রয় করতে পারবেন।
নিচে আপনাদের জন্য পণ্যের প্রাকৃতিক চাঁকের মধু মুল্য তালিকা
১| আমরা সারাদেশে এস এ পরিবহন,এজে আর, ও জননী কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পণ্য ডেলিভারি দিয়ে থাকি।
২| পণ্য পছন্দ না হলে আমরা সেটা সুন্নাতের উপর আমল হিশেবে ফেরৎ নিয়ে থাকি । সে ক্ষেত্রে শুধু কুরিয়ার খরচ ফেরৎ যোগ্য নয়।
৩| অর্ডার করার পূর্বে চাষের মধু সম্পর্কে গুগলে সার্চ দিয়ে বিস্তারিত দেখে নেওয়ার অনুরোধ রইলো।
৪| বিশ্বাসের সওগাত নিয়ে আমাদের এই যাত্রা শুরু করেছি। অতএব কাউকে ভেজাল
পণ্য দিয়ে আমাদের বিশ্বাস ভাঙ্গার কোন ইচ্ছাই নেই। বিশ্বাস এমন এক বস্তু
যেটা বিনে পয়সায় অর্জিত অনেক অনেক বড় একটি সম্পদ।
৫| কুরিয়ার খরচ ও পণ্যের মূল্য পরিশোধ হলেই তবে সেই অর্ডার কনফার্ম বলে গণ্য হবে
৬| মধু সেল করতে গিয়ে যেন ঈমান বিক্রয় না হয়ে যায় সেই বিষয়ের দিকে পূর্ণ লক্ষ রাখা হয়।
#বিঃদ্রঃ আপাতত আমরা মধু, খেজুরের পাটালি এবং ঝোলা গুড় এবং রাজশাহী এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের ফ্রেশ আম নিয়ে আমাদের যাত্রা শুরু করেছি।
ক্রমানুসারে আমরা ধীরে ধীরে আরো খাদ্যদ্রব্য (অর্গানিক শুকনো ও কাচা মরিচের
গুড়া, হলুদ গুড়া,ধনিয়া গুড়া, জিরার গুড়ো ও স্পেশাল তরকারির বাহারি মশলা
গুড়) ও দেশি,ইন্ডিয়ান,কাশ্মীরী ও পাকিস্তানি ঔষধি গাছগাছড়া ও গাছের
পাউডার আমাদের ব্যাবসায় সংযোজন করবো ইংশা'আল্লাহ
প্রাকৃতিক মধু বনাম চাষের মধু
চাষ
করা মধু এবং প্রাকৃতিক মধু এই দুটোর মধ্য কি কোন পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় ?
অন্যদিকে চাষ করা মধুর বাক্সের পাশে গলানো চিনির ড্রাম বা পাত্র রাখা হয় এ
ক্ষেত্রে এটাতো ফুল থেকে নেয়া নয় তাহলে এই মধুর গুনাগুন আর প্রাকৃতিক মধুর
গুনাগুন কি সমান হবে?
মৌমাছি কয়েক জাতের হয়। এর মধ্যে বাংলাদেশে প্রধানত তিনটি প্রজাতির দেখা মেলেঃ
১। Apis dorsata এপিস
ডরসাটাঃ বড় বড় মৌমাছি। সাধারণত বন-জঙ্গলে বড় গাছ কিংবা পাহাড়ের গায়ে
একেবারে প্রকাশ্যেই ইয়া বড় চাক বানায়। মানুষ দেখলেই তেড়ে আসে। একেকটা মৌচাক
থেকে বছরে ৩৫-৩৭ কেজি মধু পাওয়া সম্ভব।
২। Apis cerana indica
এপিস সেরানা ইনডিকাঃ আকারে একটু ছোট। স্বভাব চরিত্র অপেক্ষাকৃত মোলায়েম।
আমাদের চারপাশে যেসব মৌমাছি দেখা যায় তাদের অধিকাংশই এই প্রজাতির। এরা একটা
বড় চাক না বানিয়ে আকারে ছোট, একাধিক সমান্তরাল চাক বানায়। এদের চাকগুলো
লুকানো থাকে, যেমন পাহাড়ের গুহা, গাছের কুঠরী, দেয়ালের চিপায়... এদের পোষ
মানানো যায়, তবে পোষ মানে কম। মাঝে মাঝেই উদাস হয়ে নিজের মৌচাক ছেড়ে অন্য
কোথাও চলে যায়। এদের একেকটা কলোনী থেকে বছরে ২-৫ কেজি মধু পাওয়া সম্ভব।
৩। Apis mellifera
এপিস মেলিফেরাঃ ইনারা বিদেশী মৌমাছি, উৎস ইতালীতে। এপিস ইনডিকা থেকে বড়,
কিন্তু এপিস ডরসাটা থেকে ছোট। ভারী পরিশ্রমী জাত। মধু পেলেই ছোটে জোগাড়
করতে। মানুষের সাথে খাতির-ও ভালো। তেড়েফুড়ে আসে না, আবার সংসার বিবাগী হয়ে
অন্য কোথাও হারিয়ে যায় না। সারা দুনিয়ার মৌমাছি লালন-পালনকারীরা এই জাতটাকে
পোষে। এদের উৎপাদন-ও ভালো। ফুলের প্রাপ্যতার ওপর নির্ভর করে একেকটা কলোনী
৪৫ থেকে ১৫০ কেজি পর্যন্ত মধু সংরক্ষণ করে রাখতে পারে।
এখন
আমরা কী বলব, যে এপিস ডরসাটার মধুটা প্রাকৃতিক আর বাকিগুলো নয়? না, সবগুলো
মধুই প্রাকৃতিক। চাষের মধুর মতো চাকের মধুকেও সামান্য উত্তাপ দেওয়া হয়
যাতে মধুতে মিশে থাকা মোম আলাদা করা যায় এবং একটু ঘন করা যায়। সারা
বাংলাদেশের খুব সামান্য কিছু মানুষ প্রসেসিং ছাড়া মধু বিক্রি করেন।
প্রসেসিং ছাড়া মধু সাধারণত পাতলা হওয়ায় একে নকল মধু হিসেবে ভুল করেন অনেকে।
এই ঝামেলা এড়াতেই মধুর প্রসেসিং। বড় বড় কোম্পানি যেমন ডাবুর বা এপি, এরা
বিভিন্ন স্থান থেকে বিভিন্ন ফুলের মধু সংগ্রহ করে একটা নির্দিষ্ট আর্দ্রতা
এবং ঘনত্বে প্রসেস করে। এতে এদের মধু সবসময় একই রকম হয়। কিন্তু সরোবরের
বিক্রি করা 'আসাল মধু বিভিন্ন ফুল গাছের ক্ষেতে বসানো চাক থেকে সংগ্রহ করা।
এতে মধুগুলোতে রকমফের হয়। আমরা এখন মধুকে সামান্য প্রসেস করে বিক্রি করি -
মোমটা তুলে ফেলে দেওয়ার জন্য যতটুকু তাপ দেওয়া দরকার, দেওয়া হয়। তবে
আমাদের ইচ্ছে আছে, সামনে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক অর্থাৎ কাঁচা মধু বাজারে আনার।
সে জন্য আমাদের একটা গবেষণা প্রকল্প চলছে। এবার আসি চিনিপানি খাওয়ানোর
প্রসংগে। মৌমাছিরা মধু সংগ্রহ করে সঞ্চয় করে নিজেদের খাওয়ার জন্য। কেন?
কারণ বছরের একটা বড় সময়, বর্ষাকালে ফুল ফোটে কম। ফুলের সময় শীত, বসন্ত,
গ্রীষ্ম। মাঠের মৌয়ালরা যখন একটা মধুর চাক কেটে নেন তখন মৌমাছিদের কী হবে
চিন্তা করেন না। কিন্তু মধুচাষীরা নিজেদের পোষা মৌমাছিদের যত্ন নেন। যদি
ফুল না থাকে তখন মৌমাছিদের থেকে মধু সংগ্রহ দূরে থাক, তাদের বাঁচিয়ে
রাখাটাই কর্তব্য হয়ে দাঁড়ায়। চিনি বা গুড়মেশানো পানি আসলে সেই প্রচেষ্টার
অংশ।ফুলের নেকটারে যে পরিমাণ পুষ্টি উপাদান আছে, খনিজ উপাদান আছে সেগুলোতো
আর চিনিতে নেই। তাই চিনিপানি খেয়ে মৌমাছি কোনোমতে বেঁচে থাকে - ঐ সময়টাতে
সে মধু উৎপন্ন করে না। তাহলে মধু উৎপন্ন হয় কীভাবে? যখন সরিষা ফুল ফোটে,
তখন মৌচাষীরা তাদের বাক্স-প্যাটরা নিয়ে তাবু গাড়ে সরিষা ক্ষেতে। যখন লিচু
ফুলের সময় তখন মৌবাক্সগুলো নিয়ে যায় দিনাজপুরের লিচুবাগানে। এমনি করেই
সংগ্রহ করা হয় বরই ফুলের মধু কিংবা কালিজিরা ফুলের মধু। আমাদের বিক্রি করা
সুন্দরবনের মধু সংগ্রহ করা হয় সুন্দরবনের কাছকাছি পেতে রাখা মৌবাক্সগুলো
থেকে।শেষকথাঃ আমরা বলছি না সব মধু সমান। ঘরে পালা মুরগি আর বনমোরগের মধ্যে
তফাত তো আছেই। অচাষকৃত মৌমাছিদের চাকে নাম-না-জানা বুনো ফুলের মধু থাকবে
এটাই স্বাভাবিক। তবে শুধু সেটার ওপরে ভরসা করতে হলে সবার ভাগ্যে মধু খাওয়া
জুটবে না, আর দাম-ও হবে আকাশছোঁয়া। আমরা তাই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মধু
চাষাবাদের পক্ষে। তাতে মধুর দামটা যেমন হাতের নাগালে থাকে আর অনেকগুলো
ফসলের পরাগায়ন হয়, ফসলের প্রাকৃতিক উৎপাদন বাড়ে। আমরা শুধু লক্ষ্য রাখি
কোনো ভেজাল যেন না মেশে কোথাও। মানের যেন পড়তি না হয়।
সরোবরের পোষ্ট থেকে সংগ্রহিত
আসল মধু চেনার উপয় কি???
নিজিস্ব
সংগ্রহ , সাথে থেকে চাঁক ভাঙ্গা এবং অনেক বছরের মধু সংগ্রহের অভিজ্ঞতাই
আমাদের কে খাঁটি মধু চেনতে সাহায্য করে। বর্তমান ইন্টারনেটের সহজলভ্যতাই
এক দিকে মানুষ যেমন উপকৃত হচ্ছে অন্য দিকে তারা প্রতারণার স্বীকারও কম
হচ্ছে না। গুগল আর ইউটিউবের যুগে সবাই সব কিছু জানে। আপনি যদি ইউটিউবে
গিয়ে honey purity test লিখে সার্চ দেন তাহলে একটা ভিডিওতে তিন তরিকায় মধুর
পিউরিটি পরীক্ষা করা হয়েছেঃ
১।
পানিতে ঢেলে দিলে যদি সাথে সাথে পানির তলায় জমে তাহলে আসল। ২। আগুন ধরিয়ে
দিলে যদি পুড়ে যায় তাহলে আসল। ৩। বুড়া আঙুলের মাথায় দিলে যদি একটা একটা
বিন্দুর মতো স্থির হয়ে থাকে তাহলে সেটা আসল।
এ
ছাড়াও আরো কিছু সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী 'বৈজ্ঞানিক' পদ্ধতির কথা আমরা শুনতে
পাইঃ১। পিঁপড়া মধু খেলে সেটা আসল। ২। মধুতে পিপড়া না ধরলে সেটা আসল। ৩।
ফ্রিজে রেখে দিলে জমে না গেলে সেটা আসল। ৪। শীতকালে জমে গেলে তবেই সেটা
আসল।
এ ধরণের প্রশ্নের সম্মুখিন প্রায় আমাদের হতে হয়। এই প্রশ্নে
উ্ওর খুজতে গিয়ে সরোবর নামের একটি বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান যাদের মধু আমাদের
স্টোরে পাওয়া যায় এবং গুণে মানে খুবই ভালো। সেই প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে
দুইজন মানুষের সাথে যোগাযোগ করা হয় - ড. যাকারি হুয়াং এবং ড. লুস এলফেইন।
ওনারা উপরোল্লখিত সবগুলো পদ্ধতির কথা তুলে ধরে জানতে চাই - এভাবে কি খাঁটি মধু বোঝা যায়? তাঁদের দুজনেরই উত্তর ছিল, যায় না।
কেন যায় না?
কারণ,
মধুর সান্দ্রতা নির্ভর করে মধুর আর্দ্রতা ওপরে। যে মধুতে পানি বেশি সেটা
কম ঘন। যে মধুতে পানি কম সেটা অনেক ঘন। মরু এলাকার ফুলের মধু আর বাওড়
এলাকার ফুলের মধুতে অনেক তফাত থাকে। সুন্দরবনের একদম খাঁটি মধু অনেক পাতলা
হয়, আবার সরিষা ফুলের সাথে অনেক ভেজাল মেশানোর পরেও সেটাকে বেশ ঘন মনে হবে।
মধুতে সামান্য মোম মিশিয়ে দিলেই
মধুটা সটান পানির তলায় চলে যাবে, জমে থাকবে। আগুন ধরিয়ে দিলে আগুন জ্বলবে।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই মোমটা যদি মধুতে না মিশিয়ে চিনির শিরাতে মিশিয়ে
দেন, একই ফল পাবেন। আমরা অফিসে চিনির শিরা ঘন করে বানিয়ে পরীক্ষা করে
দেখিয়েছি চিনির শিরা বেশি ঘন হলে সোজা তলে চলে যায়, দ্রবীভূত হয় না।
সত্যি
কথা বলতে কী, খাঁটি মধু বানানোর চাপে অনেক ভালো মধু উৎপাদকরাও মধুকে
প্রক্রিয়াজাত করতে বাধ্য হন। প্রক্রিয়াজাত মানে মৌমাছির তৈরি মধুকে উত্তপ্ত
করে পানির পরিমাণ কমিয়ে ফেলা। দুঃখজনক হলেও, এ কাজটা করতে গিয়ে মধুর
বেশকিছু পুষ্টিমান হারিয়ে যেতে পারে। এজন্য আমরা চেষ্টা করছি মানুষের মাঝে
একটা সচেতনতাবোধ তৈরি করতে যে মৌমাছিদের থেকে সরাসরি পাওয়া প্রাকৃতিক মধুই
সবচেয়ে ভালো, হোক সেটার দাম বেশি, হোক সেটা একটু কম ঘন।
শুরুর
প্রশ্নে ফিরে যাই - ঘরে বসে খাঁটি মধু চিনব কীভাবে? কোনো উপায় নেই। শুধু
আমাদের কাছে না, পৃথিবীর বড় বড় বিজ্ঞানীদের কাছেও নেই। অনলাইন হাতুড়েরা
যেসব দেখাচ্ছে সেগুলো বাকওয়াজ ছাড়া অন্য কিছু নয়।
তবে
প্রশ্ন যদি হয় খাঁটি মধু পাবেন কীভাবে তার উত্তর দিতে পারিঃ ১। আপনি
গ্রামের দিকে থাকলে বা গ্রামের সাথে ভালো যোগাযোগ থাকলে, নিজের মধু নিজেই
দাঁড়িয়ে থেকে সংগ্রহ করুন। ২। এটা সম্ভব না হলে, কোনো বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান
থেকে সংগ্রহ করতে পারেন। কারো বিশ্বস্ততায় সন্দেহ হলে তার সাথে মধুর খামার
পর্যন্ত যেতে পারেন।
মধু স্ফটিকায়িত/ জমে যায় কেন?
স্ফটিকায়ন বা গ্র্যানুলেশন হলো মধুর তরল থেকে গ্রানুলার গঠনবিশিষ্ট
অর্ধ-কঠিন অবস্থায় যাওয়ার একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। মৌচাক থেকে আলাদা করার
পর মধু যত দ্রুত স্ফটিকায়িত হয়, চাকের ভেতর মোমের কোষে থাকলে তত দ্রুত এটি
হয় না।মধু ভোক্তারা প্রায়ই মধুর স্ফটিকায়নকে "ভুল বোঝেন"। তাঁদের অনেকেই
ভাবেন মধু স্ফটিকায়নের কারণ হলো নিম্নমান, বাজে পরিবেশে সংরক্ষণ অথবা ভেজাল
হওয়া। বাস্তবতা আসলে একেবারেই বিপরীত। যেসব মধুতে স্ফটিকায়নের স্বাভাবিক
সময় এমনিতেই দীর্ঘ, সেগুলো ছাড়া অন্যান্য মধু স্ফটিকায়িত হতে দেরী করলেই
বরং সেটি ভাজাল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।তরল মধুই বিক্রয়ের জন্য সেরা মধু। তবে
ক্রয়ের জন্য ততটা সেরা না-ও হতে পারে। স্ফটিকায়ন কিছুতেই মধুর গুণগত মান
কমায় না। এটি কেবল বাইরের কিছু গুনাগুণ বদল করে, যেমন রঙ। এটি একটি
প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। রান্নাঘরে জারে রাখা মধু স্ফটিকায়িত হয়ে যাওয়ার অর্থ
এই না যে মধু পঁচে গেছে অথবা আর খাওয়া যাবে না।
সহজ
ভাষায় বলতে গেলে মধু হলো প্রচুর ঘন একটি চিনির (কার্বোহাইড্রেট) দ্রবণ।
সাধারণত এতে ৭০% এর বেশি কার্বোহাইড্রেট ও ২০% এর কম পানি থাকে। শতাংশের
ভিত্তিতে চিনিই এখানে প্রধান। তার মানে স্বাভাবিকভাবে পানিতে যে পরিমাণ
চিনি দ্রবীভূত হয়, মধুতে তার চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে থাকে। চিনির
মাত্রাতিরিক্ততা এই দ্রবণকে অস্থিতিশীল করে। প্রকৃতি যেহেতু ভারসাম্য চায়,
তাই স্ফটিকায়ন একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।
এর
ফলে পানি থেকে গ্লুকোজ আলাদা হয়। গ্লুকোজ রয়ে যায় স্ফটিকাকারে। আর শুরুর
সেই দ্রবণ একটি ভারসাম্য অবস্থায় আসে। বিষয়টাকে জটিল না করে আরেকটু গভীরে
যাওয়া যাক।মধুর কার্বোহাইড্রেট গঠনে দুটি প্রধান চিনি থাকে। এরা হলো চিনিতে
থাকা ইনভার্ট চিনি গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ। মধুর প্রকৃতির উপর নির্ভর করে
গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজের পরিমাণে ভিন্নতা থাকে। সাধারণভাবে ফ্রুক্টজ থেকে ৩০
থেকে ৪৪% এবং গ্লুকোজ থাকে ২৫ থেকে ৪০%। এটি একটি প্রধান সূত্র। এই দুটি
মনোস্যাকারাইডের আনুপাতিক পরিমাণই নির্ধারণ করে মধু কত দ্রুত স্ফটিকায়িত
হবে। ফ্রুক্টজের চেয়ে গ্লুকোজের দ্রবণীয়তা কম বলে এটিই স্ফটিকায়নের মূল
নির্ধারক। গ্লুকোজ স্ফটিকায়িত হলে এটি পানি থেকে আলাদা হয়ে ক্ষুদ্র স্ফটিক
আকারে থাকে, যেমনটা উপরে বলা হলো। বিভিন্নজাতের মধু বিভিন্ন হারে
স্ফটিকায়িত হয় (১-২ মাস থেকে ২ বছর)। কিছু মধু পুরোপুরি স্ফটিকায়িত হয়,
কিছু আবার অত স্থিতিশীল প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যায় না। উদাহরণস্বরূপ, লক্ষ্য
করা যেতে পারে যে মধুর একটি জারে কীভাবে নিচে স্ফটিক আর উপরে তরলের একটি
স্তর থাকে। মধুর প্রকারের ভিত্তিতে স্ফটিকের আকারও বিভিন্ন রকম হয়। মূলত
মধু যত দ্রুত স্ফটিকায়িত হয়, স্ফটিক তত পাতলা হয়।স্ফটিকায়িত মধুর রঙ
তুলনামূলকভাবে মলিন হয়।এছাড়া আরো কিছু নিয়ামক রয়েছে যা বিভিন্ন মাত্রায়
স্ফটিকায়ন শুরু করা, তরান্বিত করা ও স্লথ করায় ভূমিকা রাখে। কিছু
শর্তসাপেক্ষে এও হতে পারে যে পৃথক করার কয়েকদিনের মাথায় মধু স্ফটিকায়িত হয়ে
গেলো। গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ ছাড়া মধুর অন্যান্য কার্বোহাইড্রেট উপাদান,
এমাইনো এসিড, প্রোটিন, খনিজ, এসিড ইত্যাদিও স্ফটিকায়নের প্রক্রিয়াকে
প্রভাবিত করে। এছাড়া ধুলা, পরাগরেণু, মোমের কণা বা বহিরাগত স্ফটিকের
উপস্থিতিতেও স্ফটিকায়ন তরান্বিত হতে পারে। আপনার যদি স্ফটিকায়িত মধু খেতে
ভালো লাগে, তাহলে এক চামচ স্ফটিকায়িত মধু যোগ করে সে প্রক্রিয়া দ্রুত করে
দিতে পারেন।
তাপমাত্রা,
আপেক্ষিক আর্দ্রতা ও প্যাকেটজাত করার ধরণও পার্থক্য গড়ে দিতে পারে।
স্ফটিকায়নে দেরি করাতে চাইলে তাপমাত্রার উপর সবচেয়ে মনোযোগ দিতে হবে। মধুর
ধরনের উপর ভিত্তি করে কক্ষ তাপমাত্রায় স্ফটিকায়ন শুরু হতে কয়েক সপ্তাহ,
কয়েক মাস এবং বিরল ক্ষেত্রে কয়েক দিন লাগতে পারে।শুণ্যের কম এবং অতি উচ্চ-
উভয় তাপমাত্রাই মধুকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে।গবেষণার একটি মজাদার ফল
হলো, ৫ সপ্তাহ যাবত ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখার পর ১৪ ডিগ্রি
সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এনে রাখলে বেশি পরিমাণ সময় মধু তরল থাকে। এটি ১০০%
সত্যও বলা যাচ্ছে না, আবার অস্বীকারও করা যাচ্ছে না।
সরোবরের পোষ্ট থেকে সংগ্রহিত
মধুতে ফেনা হওয়ার কারণ
মধুকে ঝাঁকি দিলে, এক পাত্র থেকে অন্য পাত্রে নিতে গেলে বা বোতলজাত করার
সময় মধুতে ঝাঁকি লাগলে মধুর উপরের অংশে সাদা বুদবুদ আকারে দেখা যায়। এটা
মুলত এয়ার বাবল যেখান থেকে ফেনা সৃষ্টি হয়।ফেনা সৃষ্টির মূল কারণ হল
আর্দ্রতা বা ময়েশ্চার। যে মধুতে আর্দ্রতা বা ময়েশ্চারের পরিমাণ বেশি সেই
মধুতে ফেনাও বেশি।বিভিন্ন কোম্পানি মধুকে প্রসেসিং করে ময়েশ্চার বা
আর্দ্রতার পরিমাণ কমিয়ে ফেলে। মধুকে হিট দেওয়া হলে ফেনা তৈরি হওয়ার
অনুঘটকগুলো নষ্ট হয়ে যায়। এজন্য প্রসেসিংকৃত মধুতে ফেনা হয় না।মধু একটি
কার্বোহাইড্রেট জাতীয় পদার্থ যাতে গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ থাকে। আর গ্লুকোজ ও
ফ্রুক্টোজ হাইড্রোজেন, কার্বন ও অক্সিজেনের সমন্বয়ে গঠিত। যে মধুতে
আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি সেই মধুতে কার্বন অণু অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে
কার্বন ডাইঅক্সাইড তৈরি করে। এতে ফেনা ও গ্যাসের সৃষ্টি হয়। ফেনা তৈরি হলে সেটাকে কিছুক্ষণ স্থিরভাবে রেখে দিলে আবার সেই ফেনা মধুতে পরিণত হয়। এতে মধুর কোন প্রকার ক্ষতি বা কোন সমস্যা হয় না।